স্বাগতম!

আমার সাইটে সবাইকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমার লেখাগুলো পড়ুন। ভালো লাগা-মন্দ লাগা জানান। সবাইকে শুভেচ্ছা।

আবেগ

কেউ কেউ এমনই থাকে
কেউ কেউ এমনও হয়,
প্রথম দেখাতেই বোধ করি
যুগ জনমের পরিচয়।


কখনো কথা না-হোক
কখনো দেখা না-হোক
মনে হয় আছি পাশাপাশি,
কোনো স্থির সিদ্ধান্ত নয়
কোনো পরিকল্পনা নয়-
তাকে নিয়ে স্বপ্ন রাশি রাশি।


এমনও চোখ থাকে
এমনও মুখ থাকে-
দেখে সব কষ্ট ভুলে যাওয়া যায়,
তাকে নিয়ে এমন দরদ থাকে,
তাকে ঘিরে এমন মমতা থাকে-
সব অপরাধ ক্ষমা করা যায়।


তার শত অক্ষমতা
পারা-না-পারা ব্যর্থতা
কত সহজেই বুঝে নেয়া যায়!
যা কিছু বলুক
যা কিছু করুক-
কোনো কষ্ট যেন তাকে খুঁজে না পায়।


২.
কেউ কেউ কাছে থাকে
সব কাজে মিশে থাকে-
তবুও কোথাও যেন নেই!
এত এত মিল
নাক মুখ তিল
তাতেও হারায় যেন খেই।


তার কাছে যুক্তি থাকে
হয়তবা মুক্তি থাকে-
অথচ তাল পায় না বেগ,
মন থাকে ঊচাটন
ক্ষণে ক্ষণে অকারণ
রেগে ওঠে আবেগ।


যতটা দাবি থাকুক
আঁচলে চাবি থাকুক
খোলে না মনের তালা,
যতই এগিয়ে যায়
ততই পেঁচিয়ে যায়
অন্তরে বাড়ে জ্বালা।


৩.
জানো নাকি মন
মানো কি এখন
এই হলো সত্যি,
কোথায় দাঁড়াবে চলো
কোথায় হারাবে বলো
জায়গা তো এক রত্তি।


ফেসবুক 

স্পর্ধা

তুমি চলে গেলে-
জেগে উঠবে আমার স্পর্ধা, বুকের বাদ্য;
আদিগন্ত আলোড়নে অলৌকিক উৎসব হবে
দিকে দিকে দাপিয়ে বেড়াবো আমি দীপ্ত অহংকারে।


কেন তুমি ধরে আছো বিষণ্ণ বাঁধন?
সরে যাও খুলে দাও দোর-
সূর্য উপুড় হোক, হুড়মুড়িয়ে ঢুকুক আলো
উত্তাল জোয়ারে ভাসুক শান্তির সাম্পান।

তুমি চলে গেলে আর কোনো ঝঞ্ঝাট থাকবে না,
কেবল ঝংকারে ঝংকারে ধ্বনিত হবে জগৎসংসার।
সংগোপন সান্ত্বনা বলে আমি রাখবো না কিছু,
সমারোহে সাজাবো সুখের সান্নিধ্য!


তুমি চলে গেলে হারিয়ে যাবে হাহাকার হরদম-
হা হা করে বেজে উঠবে শত সহস্র হুইসেল;
চলতি পথে আমি আর খাবো না হোচট
হইহই করে হেঁটে যাবো আমি নির্দ্বিধায় হেসে খেলে।


তুমি দাঁড়িয়ে থাকলে কীকরে তাড়িয়ে দেব জীবনের জড়তা
কীভাবে সুড়সুড়ি পাবে আমার উসখুস আত্মা!
তোমার রক্ত ও বৃষ্টিতে কীভাবে গরম হবে আমার নিঃশ্বাস
খুঁজো না খুঁজো না তুমি আমার সৃষ্টি; সবই তো অবিশ্বাস।


হে নুন-নয়না বেহুলা নারী,
জেনে রেখো আমি সব পারি
তুমি চোখ ফেরালেই আমি ওড়াবো পকেট ও রুমাল,
দূরে যাও অপেক্ষায় থাকো দেখে নিও অনাগত কাল।


তুমি চলে গেলে আমি দুর্বার দুর্বিনীত হবো
মৃত্যু আর দুঃখকে দেখাবো তুমুল তাচ্ছিল্য
বেপরোয়া আমি বন্দুক উঁচাবো বিরহের বুকে
তুমি না থাকলে নিভিয়ে দেব অকারণ অস্থিরতা।
তবে আর কী চাই, এবার জানাতে পারো বিদায়
তোমার প্রস্থানে পুষ্প ফোটে আমি আছি অপেক্ষায়!


তোমার গোমড়ামুখে থেমে আছে রাত্রিসখা অনন্ত অকাল
তুমি চলে গেলে ঘুরবে পৃথিবী ফিরে পাবো সাধের সকাল।

অধরা-২৩


বাইশ বছর পর আবার তোমার সঙ্গে দেখা হয়ে গেল।
 
চোখ মেলে দেখা বলতে কী বোঝায়- আমি জানি না। তোমার দিকে তাকিয়ে আমার প্রথম চক্ষু শীতল হয়েছিল সেই বাসর রাতে। তোমার নিশ্চয়ই মনে আছে, লাজুক বাঁকা চাহনিতে কী ভীরু ভাব ছিল তোমার। ছিল মৃদু শিহরণ। পঁচিশ বছর ধরে কল্পনায় আঁকা মুখের সামনে দাঁড়িয়ে আমি বলেছিলাম আলহামদুলিল্লাহ! তুমি জানালে, আল্লাহর পক্ষ থেকে আমি তোমার জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার। একটু একটু করে আমাদের কথা এগুতে লাগল। নীরব রাত্রির গায়ে লেখা হল নতুন কবিতা।

দিন-মাস-বছর গড়িয়ে চলে। আমরা খুঁজে ফিরি নিজেদের রহস্য। আবিষ্কার করি নতুন নতুন জগত। আমাদের যেসব গ্রাম জনপদ অনাবাদি পড়ে ছিল, সার্বভৌম সত্ত্বার আইনে তা একীভূত হলো রাষ্ট্রে। ধীরে ধীরে জানতে পারি কার কী পছন্দ, ভালো লাগা। দুজনের ভিন্ন ভিন্ন অপূর্ণ বৈশিষ্ট্য অঙ্গীভূত হয়ে গড়ে ওঠে এক পরিপূর্ণ অবয়ব।

আমি জানি অধরা, সাতান্ন বছরের দাম্পত্য জীবনে আমাদের রোমাঞ্চের কমতি ছিল না। পুকুর থেকে শাপলা তুলে তোমার গলায় মালা পরাতাম। তুমি নারিকেল পাতার কারুকাজ ছিল আমার রঙিন সানগ্লাস। আমাদের কোনোদিন বলতে হয়নি আই লাভ ইউ। কখনো সংশয়ে টলেনি চিত্ত।

একদিন দূর শহরে এসে উপন্যাস পড়ে জেনেছি কীভাবে বিয়ের আগে প্রেম করতে হয়। সিনেমা দেখে শিখেছি, লিভ টুগেদার ছাড়া একে অপরকে বোঝা সম্ভব নয়। কিন্তু আমরা তো এসব কিছুই করি নি। তোমাকে দেখে নিয়েছিলাম বটে, মেশার কথা তো ভাবি নি। শুধু জেনেছিলাম কিছু মৌলিক বৈশিষ্ট্য। আমাদের বিয়ের ভিত্তি ছিল এই যে, স্রষ্টার নির্দেশমতো দুজনের দৈনিক পাঁচবার প্রেমের প্রেক্ষাগৃহে যাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। মাটিতে কপাল ঠেকিয়ে স্বীকার করি নিজের সীমাবদ্ধতা।

আজ  এতদিন পরে যখন এসব বিষয়ে ভাবছি, তখন তুমি আমি অনেক দূরে। প্রগতিশীল প্রেমের চর্চা নিয়ে একদিন তোমার দিকে হাঁটতে গিয়ে এক মহাবিস্ফোরণ ঘটে যায়। মহাজাগতিক বিগব্যাঙে তুমি হারিয়ে গেছো অন্য গ্রহে। যেখানে আমার পৌঁছাতে প্রয়োজন বিকট শব্দে শিঙ্গায় ফুৎকার। রাখাল ইস্রাফিল কবে বাঁশি বাজাবে কে জানে! তবুও তোমার সঙ্গে আমার মাঝে মধ্যে দেখা হয়ে যায়। যেটুকু সময় দেখা হয় না, সেটুকু সময় আমি নিজের মধ্যে থাকি না।

প্রেমময় জীবনের লোভ

প্রেম নিয়ে আমার নিজের আবিষ্কৃত তিনটি তত্ত্ব আছে। প্রথমটি হচ্ছে, ‘মাটির ব্যাংক ভালোবাসা’। মাটির ব্যাংকে সঞ্চয়ের মতো মনের সমস্ত ভালোবাসা, দেহের সার্বিক পবিত্রতা, চাহনির সমুদয় নির্মলতা, ভাবনার সামগ্রিক শুদ্ধতা গুছিয়ে রাখতে হয় কাঙ্ক্ষিত স্ত্রীর জন্য। একমাত্র বিয়ের মাধ্যমেই তার সঙ্গে প্রেম হতে পারে।

দ্বিতীয় তত্ত্বের নাম ‘পাললিক প্রেম’। এই পর্বে ঠিক স্বামী হতে হয় না। হতে হয় প্রেমিক বন্ধু। যেখানে এক হয়ে যায় ভেতর বাহির। জ্যামিতিক সুক্ষ্মতায় মিশে যায় সকল প্রাতিপাদিক রেখা। সেই মিলনের স্পর্শবিন্দুই মানবীয় পাললিক প্রেম।

তৃতীয়, চূড়ান্ত এবং স্থায়ী প্রেমের নাম ‘সূর্যমুখী প্রেম’। যা সূর্যমুখী ফুলের মতো সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহর দিকে এককেন্দ্রীক নিবদ্ধ। সকল কাজের ভীড়ে মন-মুখ ফিরিয়ে সেখানেই খুঁজি সুখ। আমার খুব ইচ্ছা- আমরা দুজন মিলে ওই সূর্যমুখী প্রেমের সাধনায় আমাদের জীবন পার করে দেবো।

আল্লাহর কাছে অশেষ শুকরিয়া। সেরা সঙ্গীটাই তিনি আমাকে দিয়েছেন। তার মুখের দিকে তাকালে মনে হয়, আলমে আরওয়াহতে (রুহের জগত) তার সঙ্গে আমার পরিচয় ঘটেছিল। অনাদিকাল থেকে তার সঙ্গে আমার খুনসুটিময় প্রেম।


ফেসবুক 

প্রেম-ভাবনা


‘মেয়েদের মধ্যে থেকে যাদের ভালো লাগে তাদের বিয়ে করে নাও দুই, তিন, কিংবা চারটি পর্যন্ত। আর যদি এরূপ আশঙ্কা কর যে, তাদের মধ্যে ন্যায়সঙ্গত আচরণ বজায় রাখতে পারবে না, তবে, একটিই।’ (সূরা নিসা-৩)
‘মেয়েদের মধ্যে থেকে যাদের ভালো লাগে’ আয়াতের এই অংশটুকু খুব গুরুত্বপূর্ণ। মুসলমান ছেলে-মেয়েরা বিয়ের জন্য পছন্দ করতে, ভালোবাসতে পারবে কিনা- তা এই আয়াত থেকে চিন্তা করার বিষয়।

কিছুদিন আগে একটা লেখা পড়েছিলাম, ‘আমি কি ভালোবেসে বিয়ে করতে পারবো?’ ওই লেখায় বলা হয়েছে, পারিবারিক পছন্দে বিয়ে হওয়াই একমাত্র ইসলামসম্মত পন্থা নয়। মুসলিম ছেলেমেয়েদের নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিকে বিয়ে করার পূর্ণ অধিকার আছে।

সূরা নিসার ওই আয়াতের অনুবাদে মারীফুল কুরআনে বলা হয়েছে, ‘যাদের তোমরা পছন্দ করো’ আর আল কুরআন একাডেমির হাফেজ মুনির আহমেদ অনুবাদ করেছেন, ‘যাদেরকে তোমরা ভালোবাসো’।
তবে ভালো লাগা, পছন্দ করা, ভালোবাসা আর প্রেম এক কথা নয়। প্রেম হচ্ছে সম্পর্ক (রিলেশনশিপ)। ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী প্রেম হতে পারে একমাত্র বিয়ের মাধ্যমে।

আমরা নিশ্চয়ই কাউকে হুট করে ‘ভালোবাসি’ বলে প্রেমে জড়াই না। তার সম্পর্কে জেনে বুঝে যখন মনে হয় এই মেয়েটা বা এই ছেলেটার সাথে একটা জীবন পার করে দেওয়া যায়, তখন তাকে বলি, ‘আই লাভ ইউ।’
‘আই লাভ ইউ’ বলার পূর্ব পর্যন্ত চিন্তা-ভাবনা বৈধ (তবে এই জানা-বোঝার জন্য তার সাথে ব্যক্তিগতভাবে মিশে অভিজ্ঞতা অর্জনের অনুমতি নেই)। প্রেম করতে হলে আগে তাকে চিরদিনের জন্য আপন করে নিতে হবে। ‘তোমরা যখন বিয়ের জন্য এমন ছেলে বা মেয়ে পেয়ে যাবে যার চরিত্র ও জ্ঞান-বুদ্ধিকে তোমরা পছন্দ করবে, তো তখনই তার সাথে বিয়ের সম্বন্ধ স্থাপন করো।’ (তিরমিযী)

এ অধিকার মেয়েদের জন্যও সমান। সাহল ইবন সাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একবার এক মহিলা সম্ভবত তার নাম লায়লা বিনতে কায়স ইবনুল খাতিম রাসূলুল্লাহর (সা.) কাছে হাজির হয়ে তার সাথে নিজেকে বিয়ের জন্য সরাসরি প্রস্তাব পেশ করেন। (বুখারি)

অতএব পছন্দের ব্যক্তিকে ভালোবাসি বলতে হবে বিয়ের দ্বারা। আর সেটা অবশ্যই অভিভাবকদের মাধ্যমে। অভিভাকদের কর্তব্য এতে সাড়া দেওয়া। ‘যদি এমন কেউ তোমার কাছে আসে (বিয়ের পয়গাম নিয়ে)– যার চরিত্র এবং তাকওয়া সন্তোষজনক, তাহলে তার কাছে (তোমার মেয়েকে) বিয়ে দাও। যদি এমনটি না করো, তাহলে পৃথিবীতে মারাত্মকরকম ফেতনা ও বিপর্যয় দেখা দিবে’। (তিরমিযি)

দুঃখজনক হচ্ছে, আমাদের সমাজব্যবস্থায় বিয়েকে অনেক কঠিন করে রাখা হয়েছে। নিজের পায়ে দাঁড়ানো, চাকরি পাওয়া, প্রতিষ্ঠিত হওয়া কত কিছু। অথচ বিয়ের আগে প্রেমের সম্পর্ক কত সহজ! এর জন্য কিছুই লাগে না। অথচ এর চেয়ে সহজ হওয়া দরকার বিয়ে। আমার মতে, ছাত্রাবস্থায় বিয়ে হওয়া দরকার। তবে তখনই কেউ কারো দায়িত্ব (আর্থিক) নিবে না। প্রেম করার সময় তো নেয় না। ঠিক সংসার করারও দরকার নেই। অনেকটা প্রেমের মতোই, তবে মানুষটিকে চিরদিনের জন্য নিজের করে নিয়ে, ভবিষ্যতের আশায় বসে থেকে নয়। সেটা অবশ্যই অবিভাবকদের সহযোগিতায়। এ ধরনের সংস্কৃতি চালু হওয়া কি খুব কঠিন?

যাকে আমি ভালোবাসছি, একসাথে ঘুরছি, বাসা থেকে খাবার রান্না করে এনে পরম মমতায় খাওয়াচ্ছি, কষ্টের টাকা বাঁচিয়ে উপহার কিনে দিচ্ছি, মন খারাপের বিকেলে যার ভালোবাসায় আমার জীবন সুখের হয়ে উঠছে, হৃদয়ের মতো পবিত্রতম জায়গা যার জন্য বরাদ্দ করেছি, তখনও আমি নিশ্চিত নই- এই মানুষটার সাথে আজীবন থাকা হবে কিনা। প্রতিষ্ঠিত হওয়া-না হওয়া, নির্ধারিত সময়ের অপেক্ষা আর পারিবারিক পছন্দের ফাঁদে আটকে যায় আমাদের ভালোবাসার অনুভূতি। এর চেয়ে অমানবিক আর কী হতে পারে! চোখের সামনে কত হৃদয় ভেঙে যেতে দেখলাম!

তরুণ বয়সে আমরা একে অপরের প্রতি আকৃষ্ট হবো এটাই স্বাভাবিক। ভালো লাগবে, ভালো বাসবো এটাই প্রাকৃতিক নিয়ম। ‘আর তাঁর অন্যতম নিদর্শন হচ্ছে, তিনি তোমাদের মধ্যে থেকে তোমাদের জন্য যুগল সৃষ্টি করেছেন, যেন তোমরা তাদের মধ্যে স্বস্তি পেতে পারো। আর তিনি তোমাদের মধ্যে প্রেম ও মায়া সৃষ্টি করেছেন।’ (সূরা রুম-২১)

কিন্তু ইসলামের নির্দেশনা না মেনে পারিবারিক-সামাজিক মূর্খতার আনুগত্য করে স্বতঃস্ফুর্ত আবেগ অনুভূতির প্রকাশে চোরাপথে প্রেমের দ্বারস্থ হই। তারপর হয়তো একদিন প্রিয় মানুষটিকে হারিয়ে গতানুগতিক বিয়ে করতে হয়। অথচ অনুভবে মিশে থাকে অন্য কেউ। বিষণ্ণ সন্ধ্যায় পুরনো প্রেমের স্মৃতি মনে করে জীবনটা ছন্দহীন নীরস লাগে।
বিয়ে সহজ হোক। বিয়ের আগে প্রেম নয়, বিয়ের পরে পরকীয়া নয়।

নরেন্দ্র মোদির কবিতা

মৌমাছি প্রস্তাবনা

ভাষান্তর : তানিম ইশতিয়াক

মাঝে মাঝে আমি মৌমাছি হয়ে যাই
শীতসকালের সূর্যেও এনে দিই বৈশাখী তাপ
মৌমাছির মতো আমি এখানে সেখানে উড়ে বেড়াই
প্রতিটি স্থানে আমি বসি, অথচ থাকি না কোথাও...।
এক মুহূর্ত ফুলের পাশে বসি। ডুবে যাই পুষ্পসৌরভে,
মুক্ত উদাসীন আমি বাতাসে দুলে দুলে খুঁজে ফিরি গোলাপ।
কখনো কখনো আমি মৌমাছি হয়ে যাই।


যেখানে বাগান আছে, আছে সুরের ঝঙ্কার
উন্মুক্ত অরণ্যে রঙিন দৃশ্যরাজি,
জীর্ণ পথে আমি চলি না
স্বতন্ত্র আমার যাত্রা এলোমেলো বেশ।


তুমি দেখো এই উদাসীন নিঃস্ব ফকির
অথচ তার অন্তরে আমি ঐশ্বর্যের বৃক্ষ।
সময়ে সময়ে আমি মৌমাছি হয়ে যাই।


নরেন্দ্র মোদিকে আমরা রাজনীতিবিদ হিসেবে চিনলেও তিনি একজন কবি। তার আছে শৈল্পিক মন। তাই সময় সুযোগ পেলেই গুজরাটে বসে তিনি কবিতা লেখেন।

তবে সাম্প্রদায়িক রাজনীতিবিদ হিসেবে তার কুখ্যাতি থাকলেও তার কবিসত্তায় রাজনীতি নেই। মোদির পূর্বসূরি অটলবিহারী বাজপেয়ীও হিন্দি কবি হিসেবে বেশ বিখ্যাত।

গত ২০ এপ্রিল ইনডিয়ার প্রকাশনা সংস্থা ‘রূপা’ নরেন্দ্র মোদির ৬৭টি গুজরাটি কবিতার ইংরেজি অনুবাদ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করেছে। ইংরেজি অনুবাদে প্রকাশিত নরেন্দ্র মোদির কাব্যগ্রন্থের নাম ‘এ জার্নি : পোয়েমস বাই নরেন্দ্র মোদি’।

কবি মনথা অনূদিত সেসব কবিতায় দেশপ্রেমের পাশাপাশি আছে রোমান্টিক প্রেমের কবিতাও। এছাড়া তার কবিতায় ফুটে উঠেছে মানবপ্রেম, মৈত্রী ও সাম্য। একটি কবিতাতেও নেই রাজনীতির ছিটেফোঁটা। তার পরিবারের কোনো কথাও উঠে আসে নি এসব লেখায়।

নিজের কবিতা সম্পর্কে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘আমি মনে করি না- আমার কবিতা অসামান্য কিছু। তবে এখানে চিন্তার প্রবাহ আছে, যেন জলের ভেতর ঢেউ। আমি যা দেখেছি, যা অভিজ্ঞতা আছে ও কল্পনায় যা ভেবেছি, তা-ই লিখেছি।’



ফেসবুক 

ঢাবির শেষ ক্লাস

আজ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ ক্লাস ছিল। আমি যাই নি। দুপুরে ক্লাসমেট রাকিব এসে শেষ ক্লাসের বর্ণনা দিল। 

প্রেমে সেঞ্চুরি করা আমাদের সাগর নাকি আক্ষেপ করেছে, অনার্স মাস্টার্সের পাঁচ বছরে সে কোনো মেয়ের হাত ধরে ক্যাম্পাসে হাঁটতে পারে নি! সাগরের আশা পূরণ করার জন্য ম্যাডাম ক্লাসের মেয়েদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আরো নানান গল্প শুনে আমার একটু আধটু আফসোস হচ্ছিল, ধুর! কষ্ট হলেও যাওয়ার দরকার ছিল। 

তারপর দিনভর দেখলাম ফেসবুকজুড়ে বন্ধুদের শেষ ক্লাসের সেলফি, গল্প আর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের স্মৃতিচারণ। সবার ভেতরে হাহাকার। সকলেই বিষণ্ন। আমি কোনো শূন্যতা বোধ করছি না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমার ছিল, আমার আছে। 

পুনশ্চ: বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ক্লাসেও আমি অনুপস্থিত ছিলাম।

ফেসবুক